জেনে নিন প্লাস্টিকে বিষ - All Technology

This is a Technology Blog site.If you have a desire to learn, but a repository of knowledge for you to this page.Now that the technology will continue to become more self-reliant development of the last corner.I will attempt to present something new for everyone.

Recent Posts

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Tuesday, October 20, 2015

জেনে নিন প্লাস্টিকে বিষ

ক্যান্সারের বাড়বাড়ন্ত, হরমোনের সমস্যা, বাচ্চার মানসিক বিকাশে বাধা হতেই পারে এর জন্য দায়ী প্লাস্টিক। পানির বোতল, কনটেনারে মাত্রাতিরিক্ত বিপিএ কীভাবে রোগ ছড়াচ্ছে মানব শরীরে।
লেখাটা পড়তে পড়তে আশপাশে দেখে নিন। দেখবেন একটা প্লাস্টিকের বোতল-কাপ, বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তার ফিডিং বোতল, খেলনা, ফ্রিজে কোল্ড ড্রিঙ্কের বোতল, প্লাস্টিকের খাবারের পাত্র, মাইক্রোওভেনে গরম করার ‘হিট প্রুফ' কণ্টেনার কিছু না কিছু আছেই।
বাড়িতে ওয়াটার পিউরিফায়ার বসিয়ে অথবা প্লাস্টিকের ফিডিং বোতল গরম জলে ফুটিয়ে নিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত। কিন্তু এসবের পরেও কি আপনি সুরক্ষিত? নিঃশব্দে আমাদের সকলের জীবনে জায়গা করে নিয়েছে বিপিএ অথবা বিসফেনল এ (Bysphenol A)।
 
বিসফেনল এ কী?
নিঃশব্দে আমাদের জীবনে জায়গা করে নিয়েছে বিসফেনল এ। প্লাস্টিকের পাত্র, বোতল, খেলনা তৈরিতে ব্যবহার হয় পলিকার্বোনেট প্লাস্টিক। ফুড ক্যান, ধাতব পাত্র, বোতলের মুখ, জল সরবরাহের লাইনের জন্য লাগে এপোক্সি রেজিন। প্লাস্টিকের পাত্র শক্ত করার জন্য গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই দুই উপাদানে ‘বিসফেনল এ' ব্যবহার করা হয়। আমরা মনে করি, রিসাইকেল করা যায় এরকম প্লাস্টিক সুরক্ষিত। কিন্তু তা নয়। শুধু প্লাস্টিকের পাত্র নয়, সিডি, চশমা, চিকিৎসার সরঞ্জাম, দাঁত সিল করার উপাদানেও ব্যবহার করা হয় এটি।
 
কীভাবে শরীরে মেশে বিসফেনল এ?
দীর্ঘদিন ধরে প্লাস্টিকের পাত্রে খাদ্য, পানীয় ইত্যাদি খাওয়া ও পান করার ফলে ‘বিসফেনল এ' জৈব রাসায়নিকটি খাদ্য ও তরলে মাইগ্রেট করে এবং শরীরে প্রবেশ করতে থাকে। শরীরে নানা রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। এটি সিন্থেটিক ইস্ট্রোজেন যা শরীরে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেনের মতোই প্রবেশ করে এবং হরমোনগত ভাবে নানা পরিবর্তন আনে যা মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকর। কিন্তু মনে রাখতে হবে এই ক্ষতি তখনই হয় যখন নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত বিপিএ দৈনিক শরীরে প্রবেশ করে।
 
নির্ধারিত মাত্রা
শোনা যায়, এ বছর মার্কিন প্রেসিডেণ্ট ভারতে আসার সময় পানীয় জল উড়িয়ে এনেছিলেন নিজের দেশ থেকে। কেন? ন্যাশনাল টেস্ট হাউস সূত্রের দাবি, আমাদের দেশে এই মাত্রা পরীক্ষা করার যন্ত্র নেই। যন্ত্রের দাম কয়েক কোটি। ২০১৪ সালে নির্ধারিত মাত্রা অনুযায়ী ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্লাস্টিক পাত্রে বিপিএ মাত্রা নির্ধারিত করেছিল ০.৬ পার্টস প্রতি বিলিয়ন (PPB)। ২০১৪ সালের নির্ধারিত মাত্রা অনুযায়ী ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্লাস্টিক পাত্রে বিপিএ মাত্রা (টলারেবল ডেইলি ইনটেক) নির্ধারিত করেছিল ০.৬ পার্টস প্রতি বিলিয়ন (PPB)।
ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটির মতে, সুরক্ষিত মাত্রার মধ্যে বিপিএ শরীরে প্রবেশ করলে কোনও ক্ষতি হয় না। তবে মনে রাখা জরুরি, ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটির পূর্ব নির্ধারিত বিপিএ মাত্রা ছিল প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট মানবদেহের সর্বমোট ওজনে প্রতি কিলোগ্রামে ৫০ মাইক্রোগ্রাম (মাইক্রোগ্রাম/দেহের ওজনের প্রতি কিলোগ্রাম/প্রতিদিন)। কিন্তু বর্তমানে তা ৫০ মাইক্রোগ্রাম থেকে কমে হয়েছে ৪ মাইক্রোগ্রাম। এই সচেতনতার ফলে পৃথিবীর বহু দেশে নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে বিপিএ।
 
বিপিএ-এর ক্ষতিকর প্রভাব
বিপিএ প্রজননের ক্ষমতা নষ্ট করে। ডিম্বাণুর বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
হিউম্যান রিপ্রোডাকশন নামে এক জার্নাল জানিয়েছে, অতিরিক্ত মাত্রায় বিপিএ দীর্ঘদিন ধরে শরীরে প্রবেশ করলে পুরুষদের মধ্যে ইরেক্টাইল সমস্যা, যৌন চাহিদায় খামতি, বীর্যস্খলনের সমস্যা, সেক্স হরমোনে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
বিপিএ মহিলাদের মধ্যে হার্টের অসুখের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
ইংল্যান্ডের এক পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, বিপিএ টাইপ ২ ডায়াবিটিস, কার্ডিওভাসকুলার অসুখ এবং লিভার এনজাইম পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত।
অতিরিক্ত মাত্রায় বিপিএ প্রতিদিন শরীরে প্রবেশ করলে মস্তিষ্কের কাজে ক্ষতি করে। এছাড়াও স্মৃতি ও কোনও কিছু শেখা সংক্রান্ত মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা নষ্ট করতে পারে। হতাশার সৃষ্টি করতে পারে।
বিপিএ-এর অতিরিক্ত মাত্রা আইভিএফ-এর মতো অত্যাধুনিক চিকিত্সা ক্ষেত্রেও মহিলাদের ডিম্বাণুর গুণগত মান নষ্ট করে দিতে পারে।
বিপিএ-এর দীর্ঘদিনের ব্যবহার কারসিনোজেন কোষ বৃরি সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এটি কেমোথেরাপির প্রভাব কমিয়ে দিতেও পারে।
গর্ভস্থ শিশু যদি কন্যা হয় তাহলে ভবিষ্যতে তার স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
হাঁপানির সমস্যা বাড়ে।
শিশুদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের প্রভাবে শরীরের হরমোনে নানা ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে।
 
কোথায় দাঁড়িয়ে আমরা
২০১৪ সালে দিল্লির টক্সিকস লিংক নামে এক এনজিও বেশ কিছু ফিডিং বোতলের নমুনা বিপিএ পরীক্ষার জন্য পাঠায়। সেই পরীক্ষায় জানা যায় যে, ভারতের বাজারে পাওয়া যায় এমন সকল ব্র্যান্ডের ফিডিং বোতলে বিসফেনল-এ আছে। প্রতিটি নমুনায় গড়ে ১.৬৮ পার্ট প্রতি মিলিয়ন বিপিএ পাওয়া গিয়েছে যেখানে ইউরোপিয়ান  ইউনিয়নের নির্ধারিত মাত্রা ছিল ০.৬ পার্ট প্রতি মিলিয়ন। সর্বাধিক মাত্রা ছিল ৯.৮ পিপিএম। অনেক দেশ বিপিএ সম্পর্কে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভারতে সেরকম কোনও আশানুরূপ উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস এখনও তাদের পরিমার্জিত বিপিএ-এর নির্ধারিত মাত্রা সংক্রান্ত কোনও নথি প্রকাশ করেনি। টক্সিকস লিংক-এর এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে সরকারিভাবে একটি খসড়া তৈরি হলেও অনুমোদন এখনও পায়নি। যদিও ন্যাশনাল টেস্ট হাউস সূত্রে জানানো হচ্ছে যে, সরকারিভাবে ধীরে ধীরে হলেও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রচেষ্টা করা হচেছ।
 
আপনি কী করতে পারেন?
সরকারিভাবে আমাদের দেশে বিপিএ নিষিদ্ধ নয়। ফলে এর ব্যবহার হয়তো যথেচ্ছ। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও যথেষ্ট কম। সে ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি কোনও প্লাস্টিক পাত্র বা বোতল নিয়ে সরকারি পরীক্ষাগারে নির্ধারিত নিয়ম মেনে নমুনা পরীক্ষা করার জন্য জমা দিতে পারেন। সচেতনতা বাড়ানোই এই মুহূর্তে প্রধান উদ্দেশ্য।

জেনে রাখুন
প্লাস্টিক পাত্র, বোতলের গায়ে অথবা তলায় নানা লোগো আঁকা থাকে। তিনটে তিরচিহ্নের মধ্যে থাকা সংখ্যা বুঝিয়ে দেয় বোতলে উপস্থিত উপাদানের কথা। সেগুলি প্রসেস করে পুনরায় ব্যবহার করা যায়। কিন্তু রিসাইকেল করা যায় এর মানে কি আমরা সুরক্ষিত? নিম্নলিখিত প্রত্যেক ক্ষেত্রেই বিপিএ এবং ফ্যালেট বিভিন্ন মাত্রায় ব্যবহার করা হয়।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages