ব্যাট হাতে দলের অন্যতম ভরসা, বল হাতেও তা-ই। ফিল্ডিংয়েও বড় আস্থার নাম। একের ভেতর তিন। বর্তমান সময়ে এমন কজন অলরাউন্ডারের নাম বলুন তো? সাকিব আল হাসান, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, মোহাম্মদ হাফিজ...এর বেশি বোধ হয় বলা কঠিনই হয়ে পড়বে। সাকিবদের মতো খাঁটি অলরাউন্ডার খুঁজে পাওয়া যে ক্রমেই দুর্লভ হয়ে উঠছে ক্রিকেট দুনিয়ায়।
তিন সংস্করণে অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের তালিকা দেখলেই এই সংকটের ছবিটা স্পষ্ট হবে। টেস্টে সাকিবের পরে রয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ভারনন ফিল্যান্ডার, স্টুয়ার্ট ব্রড, মিচেল জনসন, মোহাম্মদ হাফিজ, মঈন আলী। অশ্বিন, ফিল্যান্ডার, ব্রড, জনসনরাও নিজেদের অলরাউন্ডার দাবি করেন না। হাফিজ এবং মঈনের নামটা রাখা যায়। তাও হাফিজের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে নানা প্রশ্ন। বোলিংটা নিজের অস্ত্রের তালিকা থেকে বাদই হয়তো দিতে হবে তাঁকে।
ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে তিলকরত্নে দিলশান, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের অলরাউন্ডার হিসেবে না হয় একটা নাম-ডাক রয়েছে। কিন্তু এ তালিকায় রয়েছেন জেমস ফকনার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, রবিন্দ্র জাদেজারাও। জ্যাক ক্যালিস, শেন ওয়াটসন কিংবা সাকিবরা যে অর্থে অলরাউন্ডার, সেই যোগ্যতাগুলো বিবেচনায় নিলে এই নামগুলো বড্ড ফিকেই দেখাবে। টি টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য বিভিন্ন অলরাউন্ডাররাই তালিকায় এসেছেন। তবে তাঁদের অধিকাংশই যতটা না অলরাউন্ডার, তার চেয়ে বেশি ‘মিনি’ অলরাউন্ডার।
সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ অলরাউন্ডারের বড্ড অভাব। ‘কাজ চালানো যায়’ এমন অলরাউন্ডারে ভরে উঠছে ক্রিকেটে। সাকিবের মতো অলরাউন্ডার থাকা মানে সেই দলটি মাঠে নামে আসলে ১২ জন নিয়ে। কিন্তু এই রকম পুরোদস্তুর অলরাউন্ডারের ঘোর সংকট এখন চলছে ক্রিকেটে।
র্যাঙ্কিং দিয়ে সবকিছুর বিচার হয় না। র্যাঙ্কিং আসল ছবিটা ফুটিয়ে নাও তুলতে পারে। কিন্তু দৃষ্টি মেলেও সত্যিকারের অলরাউন্ডার খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। একটা সময় লঙ্কান অধিনায়ক ম্যাথুসের মধ্যে খাঁটি অলরাউন্ডার হওয়ার লক্ষণ দেখা গেলেও এখন কেবল ব্যাটিংয়েই জোর দিচ্ছেন। একসময় অলরাউন্ডারের ‘খনি’ দক্ষিণ আফ্রিকাও ক্যালিসের শূন্যতা পূরণ করতে পারছে না। ভারত কিংবা পাকিস্তানের অবস্থাও তথৈবচ। ইংল্যান্ড দলে এখন আলো ছড়াচ্ছেন মঈন আলী ও বেন স্টোকস। কিন্তু দুজনই এখনো বোলিং কিংবা ব্যাটিংয়ে অধিনায়কের বিরাট আস্থা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি।
প্রশ্ন হতে পারে খাঁটি অলরাউন্ডারের সংজ্ঞা কী? নানা মুনির নানা মতামত। কেউ বলেন, অলরাউন্ডার হচ্ছেন সেই খেলোয়াড় যিনি কেবল ব্যাটিং কিংবা বোলিং দিয়েই দলে জায়গা করে নিতে পারেন। দুটোতেই তিনি এমন দক্ষ। আরেকটি চমৎকার সংজ্ঞাও আছে, তিনিই অলরাউন্ডার যিনি ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম ছয়জনের একজন এবং যেকোনো মুহূর্তে তাঁর হাতে বল তুলে দিতে পারেন অধিনায়ক। সংজ্ঞাই যা-ই হোক, ক্রিকেটে আদর্শ অলরাউন্ডারের তালিকাটা খুব একটা লম্বা নয়।
কিংবদন্তি গ্যারি সোবার্স অবশ্যই সর্বাগ্রে। আশির দশকটাই ছিল অলরাউন্ডারদের স্বর্ণ যুগ। এ সময় ক্রিকেট দেখেছে চার কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের রাজত্ব। ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, রিচার্ড হ্যাডলি, কপিল দেবরা দোর্দণ্ড প্রতাপে মাতিয়েছেন ক্রিকেট দুনিয়া। বর্ণবাদের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা নিষিদ্ধ হওয়ায় ক্লাইভ রাইসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ‘কী হতে পারত’ এমন আফসোসের বৃত্তে শেষ না হলে তালিকাটা হয়তো লম্বা হতো।
নব্বই দশকেও কিছু দুর্দান্ত অলরাউন্ডারের দেখা পেয়েছিল ক্রিকেট। দক্ষিণ আফ্রিকা দলেই ছিলেন হ্যানসি ক্রনিয়ে, শন পোলক, ল্যান্স ক্রুজনার এবং জ্যাক ক্যালিস। পাকিস্তানের আবদুল রাজ্জাক, আজহার মেহমুদ কিংবা নিউজিল্যান্ডের ক্রিস কেয়ার্নস।
নতুন শতাব্দীতে বেশ কিছু অলরাউন্ডারের দেখা পায় ক্রিকেট। সবার আগে বলতে হবে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের কথা। নিজের দিনে শুধুমাত্র ব্যাটিং কিংবা বোলিং দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে পারতেন প্রতিপক্ষকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরাট আশার প্রদীপ হয়ে এসেছিলেন শেন ওয়াটসন। পরিপূর্ণ অলরাউন্ডারদের তালিকায় সর্বশেষ নাম বাংলাদেশের সাকিব। ক্যালিসের পর সাকিবই কেবল অলরাউন্ডারের তিনটি বিভাগেই সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে অলরাউন্ডার তালিকায় সবার ওপরে সাকিবের নাম থাকাটা তাই অবশ্যম্ভাবী।
বিশ্বের এত এত ক্রিকেটারদের মাঝে সাকিবকে যদি অলরাউন্ডার পারফরম্যান্স দিয়ে কাউকে হুমকিতে ফেলতে পারতেন, তিনি ওয়াটসন। এ অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার কদিন আগে বিদায় জানালেন টেস্ট ক্রিকেটকে। নিজের বড় এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে টেস্ট ছাড়তে দেখে খুশি হতে পারবেন না সাকিব নিজেও। নিখাদ অলরাউন্ডারের যে বড় অভাব!
ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে তিলকরত্নে দিলশান, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের অলরাউন্ডার হিসেবে না হয় একটা নাম-ডাক রয়েছে। কিন্তু এ তালিকায় রয়েছেন জেমস ফকনার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, রবিন্দ্র জাদেজারাও। জ্যাক ক্যালিস, শেন ওয়াটসন কিংবা সাকিবরা যে অর্থে অলরাউন্ডার, সেই যোগ্যতাগুলো বিবেচনায় নিলে এই নামগুলো বড্ড ফিকেই দেখাবে। টি টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে অবশ্য বিভিন্ন অলরাউন্ডাররাই তালিকায় এসেছেন। তবে তাঁদের অধিকাংশই যতটা না অলরাউন্ডার, তার চেয়ে বেশি ‘মিনি’ অলরাউন্ডার।
সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ অলরাউন্ডারের বড্ড অভাব। ‘কাজ চালানো যায়’ এমন অলরাউন্ডারে ভরে উঠছে ক্রিকেটে। সাকিবের মতো অলরাউন্ডার থাকা মানে সেই দলটি মাঠে নামে আসলে ১২ জন নিয়ে। কিন্তু এই রকম পুরোদস্তুর অলরাউন্ডারের ঘোর সংকট এখন চলছে ক্রিকেটে।
র্যাঙ্কিং দিয়ে সবকিছুর বিচার হয় না। র্যাঙ্কিং আসল ছবিটা ফুটিয়ে নাও তুলতে পারে। কিন্তু দৃষ্টি মেলেও সত্যিকারের অলরাউন্ডার খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। একটা সময় লঙ্কান অধিনায়ক ম্যাথুসের মধ্যে খাঁটি অলরাউন্ডার হওয়ার লক্ষণ দেখা গেলেও এখন কেবল ব্যাটিংয়েই জোর দিচ্ছেন। একসময় অলরাউন্ডারের ‘খনি’ দক্ষিণ আফ্রিকাও ক্যালিসের শূন্যতা পূরণ করতে পারছে না। ভারত কিংবা পাকিস্তানের অবস্থাও তথৈবচ। ইংল্যান্ড দলে এখন আলো ছড়াচ্ছেন মঈন আলী ও বেন স্টোকস। কিন্তু দুজনই এখনো বোলিং কিংবা ব্যাটিংয়ে অধিনায়কের বিরাট আস্থা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি।
প্রশ্ন হতে পারে খাঁটি অলরাউন্ডারের সংজ্ঞা কী? নানা মুনির নানা মতামত। কেউ বলেন, অলরাউন্ডার হচ্ছেন সেই খেলোয়াড় যিনি কেবল ব্যাটিং কিংবা বোলিং দিয়েই দলে জায়গা করে নিতে পারেন। দুটোতেই তিনি এমন দক্ষ। আরেকটি চমৎকার সংজ্ঞাও আছে, তিনিই অলরাউন্ডার যিনি ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম ছয়জনের একজন এবং যেকোনো মুহূর্তে তাঁর হাতে বল তুলে দিতে পারেন অধিনায়ক। সংজ্ঞাই যা-ই হোক, ক্রিকেটে আদর্শ অলরাউন্ডারের তালিকাটা খুব একটা লম্বা নয়।
কিংবদন্তি গ্যারি সোবার্স অবশ্যই সর্বাগ্রে। আশির দশকটাই ছিল অলরাউন্ডারদের স্বর্ণ যুগ। এ সময় ক্রিকেট দেখেছে চার কিংবদন্তি অলরাউন্ডারের রাজত্ব। ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, রিচার্ড হ্যাডলি, কপিল দেবরা দোর্দণ্ড প্রতাপে মাতিয়েছেন ক্রিকেট দুনিয়া। বর্ণবাদের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা নিষিদ্ধ হওয়ায় ক্লাইভ রাইসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ‘কী হতে পারত’ এমন আফসোসের বৃত্তে শেষ না হলে তালিকাটা হয়তো লম্বা হতো।
নব্বই দশকেও কিছু দুর্দান্ত অলরাউন্ডারের দেখা পেয়েছিল ক্রিকেট। দক্ষিণ আফ্রিকা দলেই ছিলেন হ্যানসি ক্রনিয়ে, শন পোলক, ল্যান্স ক্রুজনার এবং জ্যাক ক্যালিস। পাকিস্তানের আবদুল রাজ্জাক, আজহার মেহমুদ কিংবা নিউজিল্যান্ডের ক্রিস কেয়ার্নস।
নতুন শতাব্দীতে বেশ কিছু অলরাউন্ডারের দেখা পায় ক্রিকেট। সবার আগে বলতে হবে অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের কথা। নিজের দিনে শুধুমাত্র ব্যাটিং কিংবা বোলিং দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে পারতেন প্রতিপক্ষকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরাট আশার প্রদীপ হয়ে এসেছিলেন শেন ওয়াটসন। পরিপূর্ণ অলরাউন্ডারদের তালিকায় সর্বশেষ নাম বাংলাদেশের সাকিব। ক্যালিসের পর সাকিবই কেবল অলরাউন্ডারের তিনটি বিভাগেই সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে অলরাউন্ডার তালিকায় সবার ওপরে সাকিবের নাম থাকাটা তাই অবশ্যম্ভাবী।
বিশ্বের এত এত ক্রিকেটারদের মাঝে সাকিবকে যদি অলরাউন্ডার পারফরম্যান্স দিয়ে কাউকে হুমকিতে ফেলতে পারতেন, তিনি ওয়াটসন। এ অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার কদিন আগে বিদায় জানালেন টেস্ট ক্রিকেটকে। নিজের বড় এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে টেস্ট ছাড়তে দেখে খুশি হতে পারবেন না সাকিব নিজেও। নিখাদ অলরাউন্ডারের যে বড় অভাব!
No comments:
Post a Comment