মেঘ দেখতে সাজেকে - All Technology

This is a Technology Blog site.If you have a desire to learn, but a repository of knowledge for you to this page.Now that the technology will continue to become more self-reliant development of the last corner.I will attempt to present something new for everyone.

Recent Posts

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Friday, September 11, 2015

মেঘ দেখতে সাজেকে

মেঘ দেখতে আমরা দার্জিলিং যাই, শিলং যাই; কিন্তু কে জানত, দেশের মধ্যেই এমন জায়গা আছে, যেখানে সত্যিকারের মেঘ এসে নিত্য ভিজিয়ে দেয়, ঝাপসা করে দেয় চারদিক!
জায়গাটার নাম সাজেক। অবস্থান রাঙামাটি জেলায়। কিন্তু যেতে হয় খাগড়াছড়ি হয়ে। সাজেক যাওয়ার পথটাও দেশের সবচেয়ে উঁচু সড়ক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা কিছুদিন আগেই রাস্তাটা বানিয়ে শেষ করেছে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা, তারপর বাঘাইহাট হয়ে সাজেক। আমরা এবার তিন দিনের ছুটিতে ঘুরে এলাম। ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচজনের দল। পুরো রাস্তাটাই অপূর্ব, আশপাশের দৃশ্য বড় মনোরম। কিন্তু কোথাও কোথাও এমন খাঁড়া চড়াই-উতরাই যে পাহাড়ি রাস্তায় অভিজ্ঞ ও দক্ষচালকের বাহনে সওয়ার না হলে বিপর্যয় হতেই পারে। আমাদের দলের সবচেয়ে ছোট সদস্য যার বয়স চার বছর, তার তো বেশির ভাগ সময় রাস্তাটাকে রোলার কোস্টারই মনে হলো।
পাহাড়ের মানুষজন এমনিতেই খুব চমৎকার আর বন্ধুভাবাপন্ন। কিন্তু খাগড়াছড়ি থেকে রওনা হয়ে দীঘিনালা পার হওয়ার পরই অদ্ভুত মন ভালো করে দেওয়া একটা ব্যাপার ঘটতে থাকে। দূর থেকেই গাড়ির আওয়াজ পেয়ে ছোট ছোট বাচ্চারা দুদ্দার ছুটে এসে রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে হাত নাড়তে থাকে। কে ওদের এভাবে অভিবাদন জানানোর কায়দাটা শিখিয়েছে, কে জানে, কিন্তু দৃশ্যটা ভারি চমৎকার। আমাদের দলের প্রত্যেকেরই একই মত, সাজেক বললেই সবার মনে এই স্মৃতিটা উঁকি দেবে।
সবুজে মোড়ানো প্রকৃতির মাঝে আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ বেয়ে দুঃসাহসিক এই ভ্রমণ যেখানে ফুরাবে, সেটাই সাজেকের মূল কেন্দ্র। নাম রুইলুইপাড়া। ছবির মতো পথঘাট। পথের দুপাশে লাল-সবুজ রঙের বাড়ি। কাছে-দূরের সব পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে মেঘ জমে আছে। বেশি উঁচু পাহাড়গুলো অবশ্য সবই সীমান্তের ওপারে। আমরা যখন সেখানে পৌঁছালাম, সোনালি আলোয় ভেসে যাচ্ছিল পুরো উপত্যকা। আর একটু পর দেখলাম, সূর্যটা নিচে নেমে যাচ্ছে। সাজেকের প্রতিটা ক্ষণেরই আলাদা রূপ। আমরা বেলায় বেলায় সাজেকের বদলে যাওয়ার রূপ দেখেছি।
ছুটির দিনে অনেকেই সাজেকে গিয়ে দিনে দিনে বেরিয়ে যান। রাতে থাকেন না। যাদের থাকার সুযোগ হয়, তাদের অভিজ্ঞতাটা একেবারেই অন্য রকম। আকাশভরা তারা, পূর্ণিমা হলে তো কথাই নেই। পাহাড়ের কোলে জমে থাকা মেঘগুলোকে মনে হয় নদী
কিংবা জলাশয়।
রুইলুইপাড়া থেকে আরেকটু দূরে কংলাকপাড়া। টেনেটুনে ২০টি ঘর। হেঁটে যেতে আধঘণ্টা। সেখানে থেকে সাজেক ভ্যালির বড় অংশটা দেখা যায়। এ ছাড়া সাজেকে থাকার বেশির ভাগই সময়ই অলস কাটে। বারান্দা বা খোলা জায়গায় বসে বা শুয়ে মেঘের আনাগোনা দেখে, নয়তো বই পড়েই সময় পার করে দেওয়া যায়। হঠাৎ হঠাৎ এক টুকরো মেঘ অথবা বৃষ্টি এসে বড়জোর ভিজিয়ে দিয়ে যাবে। এভাবেই বদলে যায় দৃশ্যপট। হঠাৎ হঠাৎ সব এমনই ফকফকা যে সীমান্তের ওপারে পাহাড়ের ঘরবাড়ি, ঝরনা, মন্দির পর্যন্ত দেখা যায়। কিছুক্ষণ বাদেই হয়তো মেঘ এসে ঢেকে দেবে চারদিক।
রুইলুইপাড়ায় রোজ সকাল আর বিকেলের দিকে আদিবাসী ঘর থেকে ভেসে আসে সুমধুর গান। তাদের নিজস্ব ভাষা ও সুরের।

জেনে নিন
* খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার পথ দুর্গম ও পাহাড়ি। পার্বত্য জেলার বাইরে থেকে চালক বা গাড়ি না নেওয়াই ভালো। খাগড়াছড়ি থেকে চাঁদের গাড়ি, মাইক্রোবাস বা অটোরিকশা ভাড়া পাওয়া যায়। চালকেরাও অভিজ্ঞ।
* এমনভাবে রওনা দিন যাতে বেলা থাকতেই সাজেক পৌঁছে যেতে পারেন। আগে থেকে জানিয়ে রাখলে, সাজেক রিসোর্ট থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
* প্রচুর মশা ও পোকামাকড় রয়েছে। মশানিরোধক মলম সঙ্গে নেওয়া ভালো।* সাজেকে হাঁটাহাঁটি করার বিস্তর সুযোগ। উপযুক্ত জুতা নিয়ে যান। ফ্যাশনেবল স্যান্ডেল-জুতো বিপাকে ফেলবে।
* অলস সময় প্রচুর। কাজেই বইপত্র, গান শোনা বা মুভি দেখার ব্যবস্থা হাতের কাছে রাখা উচিত।
* সাজেকে বিদ্যুৎ নেই। সৌরবিদ্যুৎ আর জেনারেটর থাকলেও সে সুবিধা সীমিত সময়ের জন্য পাবেন।
* পানিরও সংকট রয়েছে। সঙ্গে পর্যাপ্ত খাওয়ার পানি নিয়ে নেওয়া উচিত।

যাওয়ার ব্যবস্থা
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালা পর্যন্ত এসি ও নন-এসি বাস যায়। যেমন—শান্তি¯পরিবহন, বিআরটিসি, সেন্ট মার্টিন সার্ভিস, এস আলম, শ্যামলী, সৌদিয়া। ভাড়া জনপ্রতি ৬০০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকেও শান্তি পরিবহনের নন-এসি বাস যায়, ২০০ টাকা ভাড়া। এরপর সাজেক পর্যন্ত আসা-যাওয়া বাবদ দিন বুঝে চাঁদের গাড়িতে ৩ থেকে ১২ হাজার টাকা নেবে।
থাকার ব্যবস্থা
আগে থেকে বুকিং দিয়ে না গেলে সাজেক পৌঁছে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হতে পারে। থাকার ব্যবস্থা মূলত দুটো-সেনাবাহিনী পরিচালিত ‘সাজেক রিসোর্ট’ আর ‘রুন্ময় রিসোর্ট’। দুটোতেই পাঁচটি করে কামরা। খাওয়ার ব্যবস্থাও সেখানে। দেশি তরকারি, খিচুড়ি, ভর্তা, সবজি সব হয়। তবে মাছটা কম। বেশির ভাগ সময় মাংসটাই থাকে মূল আয়োজনে। খাওয়ার খরচটাও কিন্তু বেশি নয়

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages