এখন গেম বানাচ্ছে রূপকথা - All Technology

This is a Technology Blog site.If you have a desire to learn, but a repository of knowledge for you to this page.Now that the technology will continue to become more self-reliant development of the last corner.I will attempt to present something new for everyone.

Recent Posts

Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

Monday, September 14, 2015

এখন গেম বানাচ্ছে রূপকথা

এক বিকেলে রাজধানীর নিকেতন এলাকায় ওদের বাসায় গিয়ে দেখা গেল রোবলক্সে তৈরি গেম খেলছে ওয়াসিক ফারহান। রূপকথা নামেই যে বেশি পরিচিত। রোবলক্স কম্পিউটার গেমের একটি প্ল্যাটফর্ম। যেখানে গেমাররা সহজেই নিজের গেমের দুনিয়া তৈরি করে নিতে পারেন। তবে গেমে পরিবর্তন আনতে জানতে হয় প্রোগ্রামিং ভাষা লুয়া।
মাত্র নয় বছর বয়সী রূপকথা এই লুয়া ভাষাটি জানে। তাই নিজের মতো করে গেম, গেমের চরিত্রগুলো বানিয়ে নিতে পারে সহজেই। লুয়া দিয়ে রূপকথা এখন পর্যন্ত ১১টি গেম বানিয়েছে রোবলক্সে। রূপকথার কাছে জানতে চাইলাম কীভাবে সে কাজ করে। কাজে বাধা পড়ায় কিছুটা বিরক্ত হয়ে আবার ডুবে যায় তার গেমের দুনিয়ায়। এরপর একসময় বলে, ‘আমি স্ক্রিপ্টিং করি।’
নিজের বাসায় ওয়াসিক ফারহান দিনের বেশির ভাগ সময়ই দুহাতে দুটি কম্পিউটার নিয়ে একমনে গেম খেলে, ওয়েবে ঘোরে কিংবা প্রোগ্রামিং করে চলে। তার ধ্যানজ্ঞান দুই মনিটরের পর্দাতেই নিবদ্ধ। ওয়াসিক ফারহানকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আড়াই–তিন বছর বয়স থেকেই তার কম্পিউটার প্রতিভার কথা প্রচারিত। ২০১২ সালে ‘রিপলিস বিলিভ ইট অর নট’-এর ২৫ নভেম্বরের কমিক স্ট্রিপে দেখা যায়, ধ্যানমগ্ন এক শিশু ল্যাপটপ কম্পিউটারে কাজ করছে। ওপরে লেখা ‘বিস্ময় বালক’, নিচে ‘মাত্র ছয় বছর বয়সেই বাংলাদেশের ওয়াসিক ফারহান রূপকথা কম্পিউটার সফটওয়্যার প্রোগ্রাম করতে পারে’। বিস্ময় বালকই বটে। এই বয়সেই রূপকথা ঠাঁই করে নিয়েছে অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে। দেশ-বিদেশেও তার উদাহরণ টেনে কথা বলা হয়।
রূপকথার মা সিনথিয়া ফারহিন ও বাবা ওয়াসিম ফারহান জানালেন, বয়স এক বছর গড়াতে না গড়াতেই কি-বোর্ড, মাউস নিয়ে নাড়াচাড়ার শুরু। এরপর যত বড় হয়েছে, কম্পিউটারে রূপকথার দক্ষতা বেড়েছে। ধীরে ধীরে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখে নিচ্ছে রূপকথা। সি, সি ++, জাভা স্ক্রিপ্টে কাজ করতে পারে। এখন ব্যস্ত লুয়া নিয়ে, যাতে রোবলক্সে নিজের গেমের দুনিয়া তৈরি করা যায়।
রূপকথার বর্তমান কাজের মধ্যে আছে রিশার ভুতুড়ে বাড়ি নামের একটি গেম। শতবর্ষী এক বাড়ির আবহে তৈরি হচ্ছে গেমটি। সাতটি ঘরে রহস্যের জাল ভাঙতে হবে গেমারকে। এ ছাড়া মিশন ইম্পসিবল নামের শুটিং গেম তৈরি শুরু করেছে বলেও জানান সিনথিয়া ফারহীন। রিশার ভুতুড়ে বাড়ির অনেকখানিই তৈরি হয়ে গেছে। গ্রাফিকসও চমৎকার। শিগগিরই শেষ হবে এর কাজ।
বিস্ময়কর কম্পিউটার প্রতিভার জন্য সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের উদ্ভাবন তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছে রূপকথা। এর আওতায় মুক্তিযুদ্ধকে বিষয় করে গেম বানাতে হবে রূপকথাকে। পাশাপাশি এই গেমের পরিকল্পনা চলছে এখন। প্রথম কিস্তি হিসেবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় রাউন্ডে পেয়েছে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান। রূপকথাকে অনুদান দেওয়ার কারণ হিসেবে অনুদান কমিটি উল্লেখ করেছে, মাত্র ছয় বছর বয়সে পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে রিপ্লিস বিলিভ ইট অর নটে স্থান করে নিয়েছে রূপকথা। তাকে আরও বেশি উৎসাহিত করা উচিত।
মা-বাবার একমাত্র সন্তান ওয়াসিক ফারহানের জন্ম ঢাকায়। কম্পিউটার টেবিলটি তাঁর পছন্দের জায়গা, সেখানেই কেটে যায় সারাটা সময়। মাঝেমধ্যে বল খেলতে পার্কে যায় মা-বার সঙ্গেই। এখনো কোনো বিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য ভর্তি না হলেও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেঁটে বাড়িয়েছে নিজের জ্ঞানের পরিধি। কলম ধরে তেমন একটা লিখতে না পারলেও কম্পিউটারে টাইপ করার গতি বিস্ময়কর। আর টাইপও করে নির্ভুলভাবে। মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও নাম লিখিয়েছে সে।
১০ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনের জন্য রূপকথার কাজের একটি ভিডিও চিত্র ধারণা করা হয় সফটওয়্যার ও গেম তৈরির প্রতিষ্ঠান ব্লু স্কিমের কার্যালয়ে। সে সময় ব্ল স্কিমের সিনিয়র ডেভেলপার গাজী মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ‘রূপকথা প্রোগ্রামিং জানে। তবে তাকে কিছু করতে বললে হ্যাঁ বা না কিছু বলে না। কাজটা নিজের মতো করে শেষ করে।’
প্রোগ্রামিং করা বা নতুন কোনো বিষয় শেখা কীভাবে? রূপকথা জানায়, বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে দেখে শেখে সে। আর এভাবেই শিখতে শিখতে ছোটবেলাতেই বড়দের কাজ করে যাচ্ছে রূপকথা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages